মধু ও রসুন খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা

রসুন ও মধু: প্রমাণিত উপকারিতা, ব্যবহার, রেসিপি এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

রসুন ও মধুতে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিভাইরাল গুণ থাকতে পারে এবং এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও থাকে।
রসুন ও মধুর অনেক প্রমাণিত স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। আপনি এগুলো আলাদাভাবে বা একসঙ্গে ব্যবহার করে উপকার পেতে পারেন। এগুলো ঔষধ হিসেবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে নেওয়া যেতে পারে, অথবা প্রাকৃতিক অবস্থায় রান্নায় যোগ করা যেতে পারে।

কিছু কিছু রকমের মধু ও রসুন অন্যগুলোর চেয়ে বেশি উপকারী হতে পারে।

রসুন ও মধুর স্বাস্থ্য উপকারিতা, ব্যবহার করার সেরা ধরন, রেসিপি এবং সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে পড়তে থাকুন।

রসুন ও মধুর গুণাবলি

রসুন এবং মধু বিশ্বব্যাপী প্রাচীনকাল থেকে প্রথাগত চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। রসুনের প্রধান উপাদান হলো এলিসিন (Allicin)। এতে অক্সিজেন, সালফার এবং অন্যান্য রাসায়নিক থাকে, যা রসুনকে ব্যাকটেরিয়া নাশক এবং রোগ প্রতিরোধী করে তোলে।

একটি চিকিৎসা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রসুনের কোয়া কাটা বা চূর্ণ করলে এলিসিনের পরিমাণ বেশি বের হয়, পুরো কোয়া ব্যবহার করার থেকে। তবে কাটা বা চূর্ণ করা রসুন দ্রুত এলিসিন হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই সর্বোচ্চ উপকার পেতে হলে রসুন যত দ্রুত সম্ভব তাজা অবস্থায় ব্যবহার করা উচিত।

মধুতে প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যেগুলোকে ফ্ল্যাভোনয়েড এবং পলিফেনল বলা হয়। এই রাসায়নিকগুলি শরীরে প্রদাহ (লালভাব ও ফুলে যাওয়া) কমাতে সাহায্য করে। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সামঞ্জস্য রাখতে এবং কিছু রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। মধুতেও ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী, ভাইরাস প্রতিরোধী এবং ফাঙ্গাস (ছত্রাক) নাশক গুণ রয়েছে।

রসুন ও মধুর স্বাস্থ্য উপকারিতা

চিকিৎসা গবেষণায় রসুন এবং মধুর একক এবং সংমিশ্রিত স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। অনেক গবেষণা ঘরোয়া ওষুধের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে, যেগুলো শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ইথিওপিয়ার প্রথাগত চিকিৎসায় একটি বিশেষ ধরনের স্থানীয় মধু শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা, ত্বকের সংক্রমণ এবং ডায়রিয়া চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

রসুনকে সাধারণ সর্দি-কাশি নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হাঁপানির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে বলে মনে করা হয়। আরবের প্রথাগত চিকিৎসায় রসুন হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থ্রাইটিস, দাঁতের ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং সংক্রমণ চিকিৎসায় সুপারিশ করা হয়।

অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল

একটি ল্যাব গবেষণায় দেখা গেছে রসুন ও ‘তাজমা’ নামে একটি মধু কিছু ধরনের ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করতে সক্ষম।

গবেষণায় আলাদা করে রসুন এবং মধু পরীক্ষা করা হয় এবং আবার দুটো একসঙ্গে মিশিয়ে দেখা হয়। দুটোই আলাদা আলাদা ব্যাকটেরিয়া মারতে সক্ষম ছিল। তবে রসুন ও মধুর সংমিশ্রণ আরও বেশি কার্যকর ছিল।

এই সংমিশ্রণ নিউমোনিয়া এবং খাদ্যে বিষক্রিয়ার মতো রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ধীর বা বন্ধ করতে পারেছে। এর মধ্যে ছিল Streptococcus pneumonia, Staphylococcus aureus এবং Salmonella।

অন্য একটি ল্যাব পরীক্ষা দেখিয়েছে, রসুনের রস ও মধুর সংমিশ্রণ এমন কিছু ব্যাকটেরিয়াকে থামাতে পারে যা অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা সম্ভব নয়।

তবে মানুষের শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে মধু ও রসুন একই কার্যকরী কিনা তা জানার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।

Shopping Cart
Scroll to Top