ধ্বজভঙ্গ, লিঙ্গ শক্ত না হওয়া (ইরেকটাইল ডিসফাংশন) সমস্যার ভেষজ ও ইউনানি ঔষধ

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (Erectile Dysfunction) — এই চিকিৎসাবিজ্ঞানভিত্তিক শব্দটির সঙ্গে এখনও বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ খুব একটা পরিচিত নন। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের দেশে প্রায় ৬০% পুরুষই কোনো না কোনো সময় এই সমস্যায় ভুগে থাকেন।

আমাদের সমাজে এই রোগটিকে সাধারণত যেসব নামে ডাকা হয় তা হলো:

• ধ্বজভঙ্গ
  
  
• লিঙ্গ শক্ত না হওয়া
  
  
• পুরুষাঙ্গ দুর্বল বা নরম হয়ে যাওয়া
  
  
• সহবাসের সময় লিঙ্গের দৃঢ়তা না থাকা
  
  
• লিঙ্গ ছোট হয়ে যাওয়া বা মাঝপথে নরম হয়ে যাওয়া
  
  

এই সবগুলো লক্ষণই আসলে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন-এর আওতাভুক্ত অথবা তার কাছাকাছি কোনো সমস্যারই ইঙ্গিত দেয়।

তাই আজ আমরা আমাদের দেশে প্রচলিত ভাষায় সহজভাবে জানব —  লিঙ্গ শক্ত করার জন্য কার্যকর ও নিরাপদ ভেষজ, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, এই ওষুধগুলোর কাজ কীভাবে করে, কোথায় পাওয়া যায়, কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত এবং কোনটি আপনার শরীরের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ।

লিঙ্গ শক্ত না হওয়ার কারণসমূহ 

আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা হলো— অতিরিক্ত হস্তমৈথুন (বা খেচাখেচি) করলেই লিঙ্গ শক্ত না হওয়ার সমস্যা বা ইরেক্টাইল ডিসফাংশন দেখা দেয়। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, অতিরিক্ত হস্তমৈথুন ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের অনেকগুলো সম্ভাব্য কারণের একটি হলেও এটি মূল বা একমাত্র কারণ নয়। অনেকেই এই ভুল ধারণার মধ্যে থেকে সমস্যার প্রকৃত উৎস বুঝতে পারেন না, ফলে চিকিৎসা গ্রহণ করতেও দেরি হয়।

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা ধ্বজভঙ্গ বা লিঙ্গের দৃঢ়তা না থাকার মতো সমস্যার পেছনে রয়েছে একাধিক শারীরিক ও মানসিক কারণ। তাই সঠিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে হলে আগে এর সম্ভাব্য কারণগুলো জানা খুবই জরুরি।

নিচে ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের সাধারণ ও চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত কিছু কারণ দেওয়া হলো:

• রক্তসঞ্চালনের দুর্বলতা
  
  

• স্নায়ুবিক সমস্যা
  
  

• হরমোনের ভারসাম্যহীনতা (বিশেষ করে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি)
  
  

• স্থূলতা ও ডায়াবেটিস
  
  

• অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগ
  
  

• আত্মবিশ্বাসের অভাব
  
  

• ধূমপান ও মদ্যপান
  
  

• অতিরিক্ত হস্তমৈথুন
  
  

• ঘুমের অভাব
  
  

• পুষ্টিহীনতা
  
  

এসব কারণ এককভাবে বা একাধিক মিলেই ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের জন্ম দিতে পারে। 

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ শক্ত না হওয়া রোগের ঔষধ

আমরা অনেকেই একটা গুরুতর ভুল করে থাকি। বাজারে হকারদের মুখরোচক কথা বা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে এমন কিছু ঔষধ বা পণ্য কিনে ফেলি, যেগুলোর দাবি— “এক ফাইলেই” বা “এক ডোজেই” এই জটিল রোগের সমাধান করে দেবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কি আদৌ সম্ভব?

ইরেক্টাইল ডিসফাংশন বা লিঙ্গ শক্ত না হওয়ার সমস্যা একমাত্র কোনো একটি নির্দিষ্ট কারণের জন্যই হয় না। এটি হতে পারে একাধিক ভিন্ন ভিন্ন কারণের সমন্বয়ে। যেমন ধরুন, আপনি যেই ঔষধটি কিনলেন, সেটি হয়তো এমন কিছু উপাদান দিয়ে তৈরি যেটা শরীরকে সাময়িকভাবে উদ্দীপিত করে — অর্থাৎ ইনস্ট্যান্ট রেজাল্ট দিতে পারে। কিন্তু যদি আপনার মূল সমস্যা হয় স্নায়ুবিক দুর্বলতা বা পুষ্টিহীনতা, তাহলে সেই ইনস্ট্যান্ট উদ্দীপনা আপনার শরীরে কোনো দীর্ঘমেয়াদি উপকার করবে না।

ফলে আপনি হয়তো সাময়িকভাবে কিছুটা পরিবর্তন দেখতে পান, কিন্তু সমস্যার মূল জায়গা ঠিক না হওয়ায় কিছুদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে যান — অনেক সময় আরও খারাপ অবস্থায় পৌঁছে যান।

তাই রোগের প্রকৃত কারণ না জেনে, শুধু বাহ্যিক বিজ্ঞাপন দেখে ওষুধ বেছে নেওয়া একেবারেই বিজ্ঞানসম্মত নয়। বরং আপনার শরীরের আসল সমস্যাটি কোনটা, তা বুঝে তার ভিত্তিতে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

এখন চলুন জেনে নিই — কোন কারণে যদি এই সমস্যা হয়, তাহলে কোন ধরণের ওষুধ বা পদ্ধতি উপযুক্ত হতে পারে, এবং ইনশাআল্লাহ কীভাবে সঠিকভাবে চিকিৎসা নিলে আপনি সুস্থ যৌনজীবনে ফিরে যেতে পারেন।